আইকনিক ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর মধ্যে রোমাঞ্চকর লড়াইটি শেষমেশ পান্ডিয়া বনাম পান্ডিয়ায় পরিণত হয়েছিল। মুম্বইয়ের আগের ম্যাচে লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে হার্দিক পান্ডিয়া দলকে জেতাতে পারেননি। তবে সোমবার (৭ এপ্রিল) তিনি এই কাজটি সম্পন্ন করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন। আরসিবির বিরুদ্ধে রান তাড়া করার সময়ে দলকে জেতাতে হার্দিক মরিয়া হয়ে চার-ছয় মারতে শুরু করেন। যার মধ্যে ১৫তম ওভারে দাদা ক্রুনাল পান্ডিয়াকে পরপর ২টি ছক্কাও মারেন হার্দিক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত, ভাইয়ের দল মুম্বইকে দায়িত্ব নিয়ে হারান ক্রুনাল।
চোখ ঝলঝল হার্দিকের
আইপিএলের ২০২৫ মরশুমে পাঁচ ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই হেরেছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। সোমবার ঘরের মাঠে আরসিবি-র বিরুদ্ধে হারটি আর হজম করতে পারেননি হার্দিক। তিনি রীতিমতো বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন এবং তাঁর সতীর্থ যখন তাঁকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন, তখন তাঁর চোখ ছলছল করছিল। প্রায় কেঁদেই ফেলছিলেন হার্দিক। সেই সময়ে মাঠে সেলিব্রেশনে মেতেছিলেন বিরাট কোহলিরা। আর ডাগআউটে চুপ করে বসে ছিলেন হার্দিক। এটি তাদের টানা দ্বিতীয় এবং মরশুমে সামগ্রিক ভাবে চতুর্থ পরাজয়।
তবে হার্দিক খুব শীঘ্রই তাঁর আবেগকে সংযত করে মাঠে নেমে প্রতিপক্ষের সঙ্গে করমর্দন করেন। দাদা ক্রুনালকে অভিনন্দন জানিয়ে, জড়িয়ে ধরেন হার্দিক। ম্যাচ-পরবর্তী অনুষ্ঠান শুরুর ঠিক আগে হার্দিককে সান্ত্বনাও দিয়েছিলেন ক্রুনাল। এরপর মাঠে বসে দু'জনকে চুটিয়ে আড্ডা দিতে দেখা গিয়েছে।
ক্রুণালের জন্য মনে রাখার মতো একটি রাত
১৯তম ওভারের শেষ বলে হার্দিককে আউট করার কিছুক্ষণ পরেই যখন হ্যাজেলউডকে ছক্কা মারেন মিচেল স্যান্টনার, তখন একজন ধারাভাষ্যকার মনে করিয়ে দিয়েছিলেন যে, আরসিবি-র ডেথ-ওভার বিশেষজ্ঞ না থাকায়, ক্রুনাল শেষ ওভারটি বল করতে পারেন। বরোদার এই ক্রিকেটার আইপিএলের শেষ ওভারে বল এর আগে মাত্র পাঁচ বার করেছেন, প্রতি ওভারে প্রায় ১০ রান করে দিয়েছেন। তবে, সোমবার তিনি আরসিবি-র হিরো হয়ে যান।
শেষ ওভারে মুম্বইয়ের জয়ের জন্য ১৯ রান দরকার ছিল। যেটা করা টি২০ একেবারেই অসম্ভব ছিল না। হাতে ছিল চার উইকেট। মিচেল স্যান্টনার এবং নমন ধীর ছিলেন ক্রিজে। কিন্তু শেষ ওভারে ক্রুনাল তিন উইকেট তুলে নেন। হয় মাত্র ৬ রান। একা দায়িত্ব নিয়ে আরসিবি-র রান ডিফেন্ড করেন হার্দিকের দাদা। ক্রুনাল ওভারের প্রথম দুই বলে স্যান্টনার এবং দীপক চাহারকে আউট করেন, তার পর নমন ধীরকে আউট করে মুম্বইয়ের কফিনে শেষ পেরেকটি পোঁতেন। যার নিট ফল আরসিবি ১০ বছর পর ওয়াংখেড়ে জয়লাভ করে।
আরও পড়ুন: ICC-র আজব নিয়ম, তার জেরে প্রাপ্য এক রান কাটা গেল কোহলিদের, উঠল পরিবর্তনের জোরালো দাবি
আমি হার্দিকের কষ্টটা বুঝি
ভাইয়ের দলকে বধ করার পর ক্রুনাল বলেন, ‘আমাদের মধ্যে সেই বোঝাপড়া আছে। দিনের শেষে আমরা জানতাম যে, কোনও একজন (পান্ডিয়া) জিতবে। কিন্তু একে অপরের প্রতি আমাদের যে ভালোবাসা এবং স্নেহ রয়েছে, সেটা খুবই স্বাভাবিক। ও (হার্দিক) ভালো ব্যাট করেছে। আমরা জিতেছি। আমি জিততে চেয়েওছিলাম। হার্দিকও জিততে চেয়েছিল। আমি ওর কষ্টটা বুঝি।’