দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা ক্রিকেটার রায়ান রিকেলটনের মতে টেস্ট নয় টি-টোয়েন্টিই হচ্ছে বেশি কঠিন। অনেকে মনে করেন যে টেস্ট ক্রিকেটই খেলোয়াড়দের জন্য চূড়ান্ত পরীক্ষা, তবে দক্ষিণ আফ্রিকার রায়ান রিকেলটন মনে করেন যে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কেপটাউনে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে রিকেলটন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ব্যাটার হিসেবে ২০১৬ সালের পর টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করার কীর্তি গড়েছেন। তবে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে সেই রানগুলো করা তার জন্য তুলনামূলকভাবে সহজ ছিল, কিন্তু এসএ২০-তে এমআই কেপটাউনের হয়ে সাত ইনিংসে করা ৩০৩ রান ছিল তার থেকে বেশি কঠিন।
রিকেলটন ইএসপিএনক্রিকইনফোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকে টেস্ট ক্রিকেটার হতে চেয়েছিলাম এবং ভাবতাম টি-টোয়েন্টিতে কয়েকটা শট খেললেই চলে যাবে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট আসলে ভয়ঙ্কর কঠিন। এটা আলাদা, তবে আরও কঠিন।’ তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন যে, টি-টোয়েন্টিতে খেলোয়াড়দের প্রতি মুহূর্তে চাপের মুখে খেলতে হয়, যা এটিকে টেস্টের তুলনায় কঠিন করে তোলে। টেস্ট ক্রিকেটে একজন ব্যাটার সময় নিয়ে ধীরে ধীরে ইনিংস গড়তে পারেন, কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে প্রতিটি বলে রান তুলতে হয়।
আরও পড়ুন… ভিডিয়ো: রাইফেল হাতে ফুটবল! মণিপুরের এই ছবি দেখে অবাক বিশ্ব, উঠেছে বিতর্কের ঝড়
রায়ান রিকেলটন বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট খুব কঠিন, তবে টি-টোয়েন্টিতে প্রতিটি ডেলিভারিতেই প্রচণ্ড চাপ থাকে। টেস্টে আপনি ধৈর্য ধরে নিজের খেলা গড়ে তুলতে পারেন, তবে টি-টোয়েন্টিতে প্রতিটি বলে রান করা জরুরি।’ তিনি আরও যোগ করে বলেন, ‘আপনার ওপর সবসময় চাপ থাকে, তা অভ্যন্তরীণ হোক বা বাহ্যিক। আপনাকে নিয়ে বিশদ বিশ্লেষণ করা হয়, প্রতিপক্ষ আপনার দুর্বলতাগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। এটা বাইরে থেকে যতটা সহজ মনে হয়, বাস্তবে তা নয়।’
ফর্মহীনতা কাটাতে কঠোর পরিশ্রম
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে ভালো পারফর্ম করলেও, টি-টোয়েন্টি রায়ান রিকেলটনের জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল। কেরিয়ারের প্রথম তিন বছরে তিনি ফর্মহীনতার শিকার হন এবং গত এক বছরে কঠোর পরিশ্রম করে সেটি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছেন তিনি। ফলস্বরূপ, টি-টোয়েন্টিতে তার গড় এখন ২৯.৮৪ এবং স্ট্রাইক রেট ১৪০.৭৭। গতবারের এসএ২০ আসরে তিনি সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন, যেটি তখনকার সময়েই ব্যাটিংয়ে পরিবর্তন আনার কারণে সম্ভব হয়েছিল। এই পরিবর্তন আনতে তার বড় সহায়তা করেছিলেন লায়ন্স ও এমআই কেপটাউনের ব্যাটিং কোচ হাশিম আমলা।
রিকেলটন বলেন, ‘আমি হাশিমের সঙ্গে অনেক সময় কাটাই। তিনি অসাধারণ একজন খেলোয়াড় ছিলেন এবং সাফল্য ও ব্যর্থতা সামলানোর ক্ষেত্রে ভীষণ শান্ত ছিলেন, যা দারুণ। এটা কঠিন হলেও, তিনি চমৎকার এক ক্রিকেটার ও দারুণ কোচ। ব্যাটিংটা অনেকটাই সম্পর্কনির্ভর, আর তিন বছর ধরে তার সঙ্গে থাকার ফলে আমি তার দৃষ্টিভঙ্গির ওপর বিশ্বাস রাখতে পারি।’
রিকেলটন আরও বলেন, ‘তার মতো কেউ নিয়মিত পাশে থাকাটা দারুণ ব্যাপার। আমি যখন প্রোটিয়া (দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দল)-এর হয়ে খেলতে যাই, তখনও আমি তাকেই ফোন করি। তিনি আমার খেলা দেখেন, আর আমি তার পরামর্শ নিই। এর মানে এই নয় যে আমি অন্যদের মতামত গুরুত্ব দিই না, তবে যারা আপনার ব্যাটিংয়ে ছোট ছোট পরিবর্তনগুলো ধরতে পারে এবং পিছনের ভাবনাগুলো বুঝতে পারে, তারা আপনার জন্য বেশি কার্যকর হয়।’