করোনা অতিমারীর জেরে বেশির ভাগ কাজকর্ম এখন নেটনির্ভর, অনলাইন ও ভার্চুয়াল। এবার এক অভিনব ভার্চুয়াল অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকল আইআইটি বম্বে। সংক্রমণ এড়াতে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার খাতিরে এবার ভার্চুয়াল সমাবর্তনের আয়োজন করেছিল প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। ভার্চুয়ালাইজড উপস্থাপকদের কাছ থেকে পদক এবং ডিগ্রি গ্রহণ করেন পড়ুয়ারা। স্নাতক হন ২১৮৬ জন শিক্ষার্থী।ইনস্টিটিউট এবার এই শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত বিদায় জানাতে পারেনি। তাই এই বিশেষ ব্যাচের জন্য, পুরো সমাবর্তনটি জাতীয় সম্প্রচার মাধ্যম দূরদর্শন-এর দ্বারা প্রচারিত হল। ২০১৬ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কারের সহ-প্রাপক এবং প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানে র অধ্যাপক স্টিফেন এ শোয়ারজম্যান এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন। অধ্যাপক স্টিফেন ব্ল্যাকস্টোন-এর চেয়ারম্যান, সিইও এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা, বিশ্বখ্যাত বিনিয়োগকারী ও সমাজসেবী। ২৩ অগাস্ট রবিবার সমাবর্তনের জন্য সবাইকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত করা হয়। সমাবর্তন শুরুর আগে শিক্ষার্থী এবং পরিবারের সদস্যরা ক্যাম্পাসে ভার্চুয়াল ভ্রমণ করতে পেরেছিলেন। এই সময়ে, শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেওয়া হয় যে ৬০ বছরের বেশি পুরনো এই ইনস্টিটিউটের সম্পূর্ণ লাইব্রেরি এবার অনলাইনে উপলব্ধ হবে।এমনকি আইআইটি বোম্বাই সিনেটের সদস্যদেরও এই অনুষ্ঠানের জন্য স্বতন্ত্রভাবে ভিডিও চিত্রিত করা হয়েছিল এবং ডিজিটালি একত্র করা হয়েছিল যেখানে তাদের সবাইকে মঞ্চে বসে থাকতে দেখা যায়। ভিডিওতে তাদের শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সমাবর্তন মঞ্চে হেঁটে যেতে দেখা যায় এবং সুরক্ষার নিয়মগুলি অনুসরণ করতে দেখা যায়।আইআইটি বম্বের ডিরেক্টর এবং ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক শুভাশিস চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের সকল স্নাতকদের এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটি অভিজ্ঞতা প্রদানের জন্য কেবলমাত্র উচ্চ উদ্ভাবনী পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি, এর পাশাপাশি ছিল অধ্যাপকগণ ও কর্মচারীদের এক অসাধারণ প্রচেষ্টা। তাঁরা এটি ছাত্রদের জন্য করেন। আশা করি, এটি আমাদের স্নাতকদের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারদের বড় এবং উদ্ভাবনীভাবে চিন্তা করতে উৎসাহ যোগাবে।’এই বছর স্নাতক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩৮১ পিএইচডি, ১৮ দ্বৈত ডিগ্রি (এমটেক / এমফিল + পিএইচডি) এবং ২৭ দ্বৈত ডিগ্রি (এমএসসি + পিএইচডি) অন্তর্ভুক্ত । এর মধ্যে ৩৯জন গবেষককে ২০১৮-২০২০ সালের জন্য ‘এক্সিলেন্স ইন পিএইচডি রিসার্চ’ পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছিল। এছাড়াও মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় ৩৩ টি যৌথ পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হয়।এ বছর তিনজন শিক্ষার্থীকে তাঁদের অনন্য কাজের জন্য স্বর্ণপদক দেওয়া হয়েছে। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের (বি.টেক) শিক্ষার্থী সাহিল হিরাল শাহকে ‘প্রেসিডেন্ট অব ইন্ডিয়া মেডেল’ প্রদান করা হয়। সাহিলের নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই সাহিলের মতো দেখতে এক ব্যক্তির ভার্চুয়াল চিত্র মঞ্চে আসেন। যিনি তাঁর গলায় মেডেল পরিয়ে দেন সেই ব্যক্তির পা ছুঁতে নীচু হতেও দেখা যায়। মঞ্চে উপস্থিত প্রত্যেকে হাততালি দেয় এবং একটি ঘোষণার মাধ্যমে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ডিগ্রী অর্জনের জন্য তাঁদের ফোনে একটি অ্যাপ্লিকেশন খুলতে বলা হয়।‘ইনস্টিটিউট স্বর্ণপদক (২০১৮-১৯)’ ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী শাশ্বত শুক্লাকে দেওয়া হয়। 'ডা. শঙ্কর দয়াল শর্মা স্বর্ণপদক ’ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পিএইচডি-র ছাত্র প্রকাশ সিং বাদলকে দেওয়া হয়। পাশাপাশি, প্রত্যেক বিভাগের প্রথম স্থনাধিকারীকে রৌপ্য পদক দেন প্রধান অতিথি।