রাজ্যে অবৈধ জমি দখল নিয়ে এক প্রশাসনিক সভায় ক্ষোভ উগরে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। কসবা কাণ্ডের রেশ এখনও থিতিয়ে পড়েনি, তারই মাঝে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাফ বার্তা, সরকারি জমির জবরদখল বরদাস্ত করা হবে না, আর এই বিষয়ে কাউকে রেয়াত করবে না তাঁর সরকার।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন,'যারা সরকারি জমিতে বসে গিয়েছে…. নতুন করে যেন আর জবরদখল না হয়। তা করলে সেই এলাকার এসপি, আইসির বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন হবে। বিডিওরাও বাদ যাবে না। ডিএমরাও না। মন্ত্রক থেকে কাউন্সিলার, পঞ্চায়েত,কেউ যদি মনে করে নিজের স্বার্থে জায়গা দিয়ে দেব, সেটাও টলারেট করব না।' দিদির এই সাফ বার্তা উঠে আসে বৃহস্পতিবারে নবান্নের বৈঠক থেকে। তিনি জানিয়েছেন, জমি জবরদখলের ইস্যুতে জেলা দায়িত্ব নেবে না, রাজ্য পুলিশ বিষয়টিকে দেখবে। তিনি সাফ জানান, যারা এই অপরাধে যুক্ত, বা সরকারি জমিতে অবৈধ নির্মাণ করে এলাকা ছেড়েছে, তাদের যেখান থেকে হোক ধরে আইনের আওতায় আনা হবে। দরকারে ইডি, সিবিআইয়ের মতো করে তাদের সম্পত্তি ক্রোক করা হবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,' আইন সবার জন্য এক। বাইরে থেকে এসে সরকারি জমির উপর ফ্ল্যাট তৈরি করছে বেআইনিভাবে। ফ্ল্যাগুলি বিক্রি করে আবার বাইরে চলে যাচ্ছে, থাকছে না।। এরা বেশিরভাগ স্থানীয় নয়,আমি খোঁজ নিয়েছি। তাকে যেখান থেকে পারো ধরে আনো। এই জমির মিউটেশন কে দিল? তাদের বিরুদ্ধেও অ্যাকশন হবে। পুলিশ ডায়রেক্ট হাতে নেবে। জেলাকে দেবে না।' তিনি বলেন, দোকানদারদের জন্য একটা টাইম দাও। এছাড়াও জমি দখল উদ্ধারে ৬ মাসের সময়সীমা বেঁধে দিলেন মমতা। বসতি এলাকায় বাসিন্দাদের স্বার্থে পেনাল্টি নিয়ে বৈধ কাগজ প্রদানের সিদ্ধান্তের কথা বলেন তিনি। দিদি বলেন, গরিবদের জন্য ছাড় থাকবে, কারণ তাঁদের বৈধ কাগজ নেই। মমতা বলেন,' এখানে পেনাল্টি (জরিমানা) যুক্ত করতে হবে। যাঁরা বসবাস করছেন বা দোকানদার, তাঁদের ছ'মাস সময় দাও।'
এরই সঙ্গে মমতা বলেন,' জুন মাস পর্যন্ত সময় দিলাম। বাজারদর হলে পারবে না। ৮০:২০ নীতিতে হবে। বড় বিল্ডিংয়ে ১০০ শতাংশ, সাধারণ, দরিদ্রদের জন্য কম হবে। বিভিন্ন ধাপে জরিমানা ঠিক করতে হবে। অধিকাংশেরই আইনি কাগজ নেই, আবার বেআইনি কাগজও রয়েছে। আমরা সমব্যথী… যারা এই থেকে ব্যবসা করে খেয়েছে, তাদের প্রতি নই।'
মমতা বলেন, 'যাঁরা এভাবে ফ্ল্যাট বানিয়ে পালিয়ে গিয়েছে, তাঁদের যেখানে থেকে হোক ধরতে হবে। দরকারে ইডি, সিবিআইয়ের মতো করে সম্পত্তি ক্রোক করে এটা করতে হবে। কোনও এক্সকিউজ শুনব না, কোনও নেতা তাঁবেদারি করলে.. যে পার্টিরই হোক..আইন… আইন। গরিব লোকের দোষ নেই। সাধারণ মানুষ ভাবছেন, একটা বাড়ি হচ্ছে, একটা ফ্ল্যাট নিই। তাঁর দোষ নেই। দোষ হচ্ছে, যে করেছে বেআইনি কাজটা, আর যে লাইসেন্স দিয়েছে। তাঁদের ব্র্যাকেট করো, ব্ল্যাক লিস্টেড করে সে যেই হোক। '