বিজেপি কীভাবে বাংলায় জিতবে তা নিয়ে দলের নীচুতলার কর্মী ও নেতাদের একাংশের মধ্যে দুটি সহজ পথ ছিল। প্রথমত, ভোটে যেন কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকে। তাহলে আর তৃণমূল মাথা তুলতে পারবে ন। জিতে যাবে বিজেপি। আর দ্বিতীয়ত একাধিক তৃণমূল নেতাকে যদি ইডি সিবিআই গ্রেফতার করে নেয় তবে বিজেপির জেতার রাস্তা সুগম হয়ে যাবে।
কিন্তু এবার এনিয়ে ভুল ভাঙালেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, বিলম্বিত বোধদয়। এসব কথা তো উনিই বলতেন।
রবিবার হুগলির হিন্দমোটর ও পান্ডুয়ার কর্মীসভা করেন সুকান্ত মজুমদার। সেখানে সুকান্ত জানিয়ে দেন, মোদীজি এসে ম্যাজিক ছড়িয়ে দেবেন আর আমরা শ্রীরামপুরে জিতে যাব এটা হবে না। অনেকেই বলেন দাদা সিবিআইকে বলুন ওকে অ্য়ারেস্ট করিয়ে দিতে। তাহলেই আমরা জিতে যাব। হবে না। অনেকে বলেন , ওকে জেলে ঢুকিয়ে দিল, জিতে যাব। তাও হবে না।
সেই সঙ্গেই তিনি বার বার জানিয়ে দেন যাতে দলকে শক্তিশালী করা হয়। তার জেরেই জেতা সহজতর হবে। সুকান্ত বলেন, অনুব্রত মণ্ডল তো ছিলেন না। তিনি তো জেলে। বীরভূমে জিতেছি আমরা? সুকান্ত মনে করিয়ে দেন, আপনি পরিশ্রম করে যদি সংগঠন তৈরি করেন তবেই জিতবেন। আর আপনি যদি পরিশ্রম করে সংগঠন তৈরি করতে না পারেন তবে যাকে খুশি অ্যারেস্ট করুন কোনও দিন জিততে পারবেন না।
পান্ডুয়াতে তিনি বলেন, ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। তবে সেটা বিরিয়ানির মশলার মতো। বিরিয়ানির চাল আর মাংস সেটা দলের কর্মীদেরই হতে হবে। তবেই ভালো বিরিয়ানি হবে। জানিয়ে দিলেন সুকান্ত মজুমদার।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে লোকসভা ভোটের আগে সুকান্ত মজুমদার নিজেও বার বার বলতেন ইডি সিবিআই দিয়ে গ্রেফতার করিয়ে দেওয়ার কথা। তৃণমূলের তাবড় নেতাদের চমকানোর জন্য বার বার বিজেপি নেতৃত্ব এই ইডি সিবিআইয়ের কথা উল্লেখ করত। এনিয়ে সভাতেও হাততালিও পড়ত প্রচুর। কিন্তু যত হাততালি পেল গেরুয়া শিবির ততটা ভোট কিন্তু পড়ল না। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল এই চমকের রাজনীতি করতে গিয়ে ভোটের বাজারে বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি বিজেপি।
এমনকী শুভেন্দু অধিকারী নিজেও বার বার এই ধরনের ইডি সিবিআইয়ের কথা উল্লেখ করতেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর কথা উল্লেখ করতেন।
তবে ভোটের ফলাফল দেখে অবশেষে বোধোদয় হয়েছে খোদ বিজেপির রাজ্য় সভাপতিরই।