সংসারে অভাব–অনটন। আর তা মুছে ফেলতে প্রয়োজন বাড়তি অর্থের। তাই বিদেশে কাজ করতে গিয়েছিলেন বনগাঁর যুবক। কিন্তু সে স্বপ্ন বাস্তবায়িত হল না। কারণ ওখানে মর্মান্তিক পরিণতি হল বনগাঁর যুবকের। বিদেশের মাটিতে পাম বাগানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে গিয়েছিলেন ওই বনগাঁর যুবক। মালয়েশিয়ায় ওই বনগাঁর যুবক কৃ্ষ্ণপদ হালদার (৪৫) চোখে অনেক স্বপ্ন নিয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানেই শরীর খারাপ হয়ে যায় কৃষ্ণপদ হালদারের। তাতেই সেখানে মৃত্যু হয় তাঁর। রবিবার তাঁর দেহ বনগাঁর বাড়িতে আসতেই কান্নায় ভেঙে পড়ল গোটা পরিবার। শোকে থমথমে গোটা গ্রাম। আজ, সোমবার ভোর হতেই কান্নার শব্দ ভেসে আসতে শুরু করেছে।
এদিকে যে দেনা মাথায় নিয়ে শোধ করার উদ্দেশে মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন কৃষ্ণপদ হালদার সেই দেনা রয়েই গেল। শুধু বনগাঁর ট্যাংড়া গ্রামে বাড়ি কৃষ্ণপদ হালদারের প্রাণ চলে গেল। অদৃষ্টের এই নির্মম পরিণতিতে গোটা পরিবার আজ দিশেহারা। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে কঠিন বাস্তবের মুখোমুখি পরিস্থিতিতে কেটেছে কৃষ্ণের পরিবারের সদস্যদের। তাই মালয়েশিয়া থেকে দেহ বাড়িতে আসতেই আর নিজেদের ধরে রাখতে পারেনি গোটা পারিবার। স্থানীয় সূত্রে খবর, কৃষ্ণপদ হালদারের স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হতো। টিনের চাল দেওয়া মাটির ঘরেই বসবাস তাঁদের। বেশ কিছু টাকা দেনা হয়ে রয়েছে বাজারে। সেই টাকা শোধ করতে বাড়তি রোজগারের জন্য বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন কৃষ্ণপদ।
আরও পড়ুন: গঙ্গারামপুর পুরসভার চেয়ারম্যানকে সরাসরি হুমকি দিলেন সুকান্ত, নির্বাচন কমিশনে তৃণমূল
অন্যদিকে বিদেশে পাড়ি দিতেই পরিবারের সদস্যরা আশা করেছিলেন এবার হয়তো সুদিন ফিরবে। কিন্তু সেটা যে আরও দুর্দিন বয়ে আনবে সে কথা কল্পনাও করতে পারেননি পরিবারের সদস্যরা। এমনকী এই ঘটনা ঘটল মালয়েশিয়া যাওয়ার দেড় মাসের মধ্যে। মার্চ মাসের ২২ তারিখ হঠাৎই সব ওলটপালট হয়ে গেল হালদার পরিবারে। বাড়িতে ফোন আসে কৃষ্ণপদ হালদার অসুস্থ। তড়িঘড়ি তাঁকে তার সহকর্মীরা হাসপাতালে ভর্তি করলেও বাঁচাতে পারেনি। মৃত কৃষ্ণপদ হালদারের স্ত্রীর বক্তব্য ‘বাজারে দেনা হয়ে গিয়েছিল। এখানে তেমন কাজ জোটেনি। যা দিয়ে দেনা শোধ করা যায়। তাই দেনা শোধের এবং পরিবারকে দাঁড় করানোর স্বপ্ন ছিল বিদেশে যান স্বামী। দুই ছেলের পড়াশোনা এবং পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা আর হল না।’ এই পরিস্থিতিতে ট্যাংরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান স্বরূপ বিশ্বাস পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।