নলহাটি ১ নম্বর ব্লকের কয়থা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে খেলা দেখাল বাম–কংগ্রেস জোট। এই সমবায় নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে হারাল বাম–কংগ্রেস জোট। ২০টি আসনের মধ্যে ১৭ আসন নিজেদের দখলে রাখল বাম–কংগ্রেস জোট। আর কেষ্টভূমে এমন জয়ের খবর এখন চাউর হয়ে গিয়েছে। যা বেশ অস্বস্তির ঘাসফুল শিবিরের কাছে। ৩৭টি আসনের মধ্যে ২০টি আসনে জয় পেয়েছে বাম–কংগ্রেস জোট। তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থিত প্রার্থীরা জয়ী হয়েছে ১৭টি আসনে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই নলহাটিতে একচ্ছত্র আধিপত্য পেয়েছিল তৃণমূল। লোকসভা নির্বাচনেও কাজল শেখের নেতৃত্বে ব্লকে লিড পেয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। আজ সমবায় সমিতির নির্বাচনে ধাক্কা খেল।
এদিকে নলহাটির সমবায় সমিতির নির্বাচনে বাম গণতান্ত্রিক জোট প্রার্থীদের জয়ের খবর সামনে আসতেই এক বাম নেতা কবীর সুমনের গানের লাইন স্মরণ করিয়ে দিলেন সকলকে—‘আমরা যদি এই আকালেও স্বপ্ন দেখি, কার তাতে কী?’ পঞ্চায়েত থেকে বিধানসভা, লোকসভা থেকে উপনির্বাচন কোথাও জিততে পারেনি বামেরা। এখনও শূন্যতা কাটেনি। তারই মধ্যে সমবায় নির্বাচনে বামেদের পালে হাওয়া আসা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। হ্যাঁ, এখানে বাম–কংগ্রেস জোট বেঁধেই জিতেছে বীরভূমের নলহাটির কয়থা–১ সমবায় উন্নয়ন সমিতিতে।
আরও পড়ুন: প্রাণীজ প্রোটিন উৎপাদনে এগিয়ে বাংলা, কেন্দ্রীয় স্বীকৃতি মিলতেই আনন্দ ভাগ মমতার
অন্যদিকে নলহাটি ১ নম্বর ব্লকের কয়থা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে রবিবার নির্বাচন ছিল। ১২ বছর অর্থাৎ এক যুগ পর সমবায় নির্বাচন ছিল সেখানে। সমবায় সমিতিতে মোট আসন ৩৭। সেখানে ৩ হাজার ৫৮০ জন ভোটার ছিলেন। রবিবার সকাল থেকে শুরু হয় ভোটাভুটি। বাম–কংগ্রেস জোট পেয়েছে ২০টি আসন। বাকি ১৭টি আসন নিজেদের দখলে রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই বিষয়ে সিপিএম নেতা প্রশান্ত লেট, নাসিম শেখরা বলেন, ‘এই এলাকার কৃষকদের কাছ থেকে না কিনে সমবায় ধান কিনেছে আড়তের মাধ্যমে। গরিব কৃষকের দুটো পয়সার মুখ দেখার সুযোগ দেয়নি। কর্মী নিয়োগেও স্বজনপোষণ করা হয়েছে। তাই এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন।’
এছাড়া বীরভূমের নলহাটি–১ ব্লকের এই সমবায় সমিতিতে দুর্নীতি আর বেনিয়মের আখড়া বলে অভিযোগ উঠেছিল। নির্বাচনে জয়ী বাম সমর্থিত প্রার্থী রেজিনা বিবি, অর্চনা মণ্ডলদের বক্তব্য, ‘সমবায়ের জমি কেনা নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। আদালতে মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে। মানুষ তাই তৃণমূল কংগ্রেসের উপর ভরসা রাখেনি।’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষের দাবি, ‘মানুষ যদি নিজের ভোট নিজে দিতে পারেন, তাহলে গোটা রাজ্যে এটাই ঘটবে। আর তাই তৃণমূল সন্ত্রাস তৈরি করে ভোট দিতে দেয় না।’ যদিও তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘আমি শুনেছি। তবে কেন এমন ফলাফল হল সেটা দলগতভাবে অবশ্যই পর্যালোচনা করা হবে।’